অণুগল্প



বন মামলা

- বচন নককরেক


এ-তো জোরে পাদ মারলি লুটন, আমি তো মটর সাইকেল আইতাসে ভাবসিলাম ! বলে লাঠি হাতে নিয়ে টুকটুক করে মাটিতে টুকা মারে ভিনসেন্ট। লুটন বলে,
- ধ্যুৎ..., তুই না চোক্ষে দেহস না ...আমারে চিনলি কেমনে ?
ভিনসেন্ট দাঁত না মাজা মুখে হাহা করে হেসে নেয়...আর বলে, গা'র গন্ধ। তোমার লগে এত চলাফেরা করসি , জঙ্গল করসি(কাঠের কারবার), এক লগে থাকসি, খাইসি তোমার গায়ের গন্ধ চিনিনা ? তা এখন কই আসো লুটন ?
- জেলখানায় চাকরি করলাম এক বছর। এহন বাড়িতেই।
ভিনসেন্ট লুটনের কথা শুনে আশ্চর্য হয় প্রথমে। জেলখানায় চাকরি !! ওরে বাবা। পরেই আবার বোঝে নেয় কথাটার মানে। চা দোকানির দিকে মুখ করে ভিনসেন্ট বলে, হা-রা-মজাদা ...সোজা কইরা কইলেই অয় , জেল খাইট্যা আইলাম। জেলখানায় চাকরি তোমারে দিব মাইনসে। জোরে হাসতে গিয়ে লুটনের ঠোঁট থেকে শেখ সিগারেট পড়ে যায়। জলে ভিজে আগুন নিভে যায়। জলে ভেজা অংশটুকু ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে আবার জ্বালিয়ে নিয়ে লুটন বলে, কী করমু কও, বন মামলা চালাইতে চালাইতে সব হারাইলাম। বউ, সংসার সব। লুটন যখন জেলে ছিল, তার বউ জেসি, ঢাকা চলে যায় কাজের খোঁজে। আর ফেরেনি। কুমিল্লার এক পান দোকানিকে বিয়ে করে ফেলে। স্বামী , সন্তান রেখে যাকে বিয়ে করল তার নাকি আরো এক বউ আছে দেশের বাড়ি।
.
শীতল পাল বাঁধানও দাঁত বের করে হেসে নিয়ে বলে, মিয়ারা, চা খাবা না ? খালি ছুটুবেলা নিয়া গপ্পই করবা ? কাপ ধোয়ে টুং টুং আওয়াজ তোলে রং চা বানিয়ে দুজনকে দেয়। দোখলা। কিছুদিন পর পিকনিকের গাড়িতে ভরে যাবে ফরেস্ট বাংলো। ২-১ টি আসতে শুরু করেছে। চারটে বড় গজারি গাছের নিচে শীতল পালের চা দোকান। পান, চা, বিস্কুট, গজা, পিঁয়াজু বিড়ি, সিগারেট এই নিয়ে তার দোকান।
.
লুটন ভিনসেন্টের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে, তোর চোখ আর বালা অইলো না রে --ভিনসেন্ট ! হ, ঘর হারাইলেও আমি দুনিয়া দেখতে পাই...তুই তো তাও দেখাহাস না। মহাজনের তাগাদায় একাই গাছ কাটতে গিয়েছিল বনে ভিনসেন্ট। কিন্তু, ধরা খায়। ধরে এনে খুব টর্চার করে সারারাত । পরের দিন চালান দিয়ে দেয়। যখন ছাড়া পায় চোখে কম দেখা শুরু করে ভিনসেন্ট। এখন দেখেই না।
.
গতকাল কাকে যেন ধরে নিয়ে এসেছে ফরেস্ট গার্ডরা। বারান্দার জন্য ঝড়ে ভাঙা ডাল নিয়ে যাচ্ছিল বাড়ি..।.তাকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে মতি পাগলা। শীতল বলছে, হেডম্যান কাহা, কি খাবাইন ?
.
কোমরে গুঁজে রাখা বিড়ি বের করে জ্বালাতে জালাতে মতি পাগলা বলে, আর কবাইন না,জ্বালাইয়া খাই্লো ...পরেস ডিপারমেন । বেগগেরেই মামলা দেয়। বনে থাহাই কঠিন অইতাসে ...। বাপ দাদারা যুগযুগ ধইরা জঙ্গলেই চাষাবাদ কইরা খাইয়া বাইচ্যা আইতাসে...। যারা জঙ্গলের গাছ কাটে না তারাও মামলা খাইতাসে...। গাছ কাটার জন্য যারা টাকা দেয়(মহাজন) তাগো নামে মামলা নাই।

car slide







আমার স্লাইড

জলটুঙি
সম্পাদকঃ বচন নকরেক
প্রকাশনায়ঃ এথ্‌নিক
ভাটিকাশর, ময়মনসিংহ

ফটো স্লাইড


হা'বিমানি রা'সং

বাংলা প্রবাদ-প্রবচন

কুটুম্বের মধ্যে শালা, গহনার মধ্যে বালা।


বাংলা প্রবাদ-প্রবচন

কুটুম্বের মধ্যে শালা, গহনার মধ্যে বালা।

কুঠে মুরগীর ঠোঁটে বল

কত জনে কত কতা কত মন্তে কয় বুড়ো বেইট্যে নিজের কতা মনে ধুনি লয়।

কত জলে কত মুসুরি ভেজে দ্যাখ

কত ধানে কত চাল

কত ধানে কত চাল (জান না ?) কোন কাজের হিসাব রাখ না । কত শত গেল রথী, শেওড়াতলার চক্রবর্তী ।

কত ব্রত করলি যশী, বাকি ভূমি- একাদশী

কত রঙ্গ দেখালি মাসি !

কত রাঘব বোয়াল পড়ে রইলো—চুনো পুঁটি নিয়ে টানাটানি পরেছে.

কত রবি জ্বলে রে, কেবা আঁখি মেলে রে

কত সাধ ছিল রে চিতে, মলের আগে চুটকি দিতে

কত সাধ যায় রে চিতে, বেগুন গাছে আঁকশি দিতে

কতই বা দেখব আর, ছুঁচোর গলায় রত্নহার

কতই সাধ হয় রে চিতে, ফোকলা দাঁতে মিশি দিতে

কতক্ষণ রহে শিলা শূন্যেতে মারিলে ?

কতা কয়লে কতা বাজে, হাল বায়লে গ্যাঁড়া বাজে";

কুত্তা হাগে না খিদের ডরে ।

কুত্তার কামড় হিঁটুর নিচে।

কুত্তার খাইয়া কাম নাই, দৌড় ছাড়া হাঁটা নাই।

কুত্তার ল্যাজত পাটা ব্যান্দ্যা দিলেও সোজা হয় না।

কুত্তারে যতই তোলা দাও, ও যাবে ঠিক গু খেতে ।

কুত্তায়ে শোঙ্গে না, জজের উকিল।

কথা টলার চেয়ে পা টলা ভাল

কথা পাড়া

কথা বেচে খাওয়া

কথা শোনানো

কথা শুনে পেটের ভাত চাল হয়ে যায়

কথা শুনে হরিভক্তি উড়ে গেল

কথার কথা, কাজের নয়

কথার গুনে বার্তা নষ্ট

কথার চেয়ে কাজের গলা দরাজ।

কথার দোষে কার্য নষ্ট, ভিক্ষায় নষ্ট মান । গিন্নির দিসে গৃহ নষ্ট লক্ষ্মী ছেড়ে যান ।

কথার নেই মাথা, গরমে গায়ে কাঁথা

কথার হাত পা বের করা

কথায় কথা বাড়ে, ক্রোধে হয় ঝড়, কথা না বাড়িয়ে সখি যাও এবে ঘর

কথায় কথা বাড়ে, খেলে বাড়ে মেদ

কথায় কথায় জেঠু সাজা

কথায় চিঁড়ে ভেজে না

কুঁদের মুখে বাঁক থাকে না

কদম গাছের কানাই

কনের ঘরের মাসি, বরের ঘরের পিসি

কনের মা কান্দে আর টাকার পুঁটুলি বান্দে

কুনো ব্যাঙ

কপাল করিছি দুখতা, প্যাট করিছি সুখতা।

কপাল গুনে গোপাল ঠাকুর

কপাল চাপড়ান

কপাল ছাড়া পথ নাই

কপাল জোরে বাঁচা

কপাল যদি হীনত পড়ে, চামচিকাও ধ্যর‌্যা ড্যাব্যাই।

কপাল ঠুকে কাজে নামা

কপাল থুয়ে পাছায় চন্দন

কপাল ভাঙলে জোড়া লাগে না।

কপাল সঙ্গে সঙ্গে যায়

কপালে আছে হাড়, কী করবে চাচা সাকিদার?

কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়া

কপালে টিপ সবাই পরে, কপাল গুণে চিকচিক করে

কপালে যদি থাকে ঘি, না খেয়ে করব কি?

কপালে যদি না থাকে ঘি, ঠকঠকিয়ে করব কি?

কপালে নাইকো ঘি, ঠকঠকালে হবে কি ?

কপালের এমনি ফের, যাব বিয়ে করতে কাটি শঙ্কর ঘোষের বেড় ।

কপালের ভাঁজ বাড়ানো

কপালের লিখন না যায় খন্ডন

কপট প্রেমে লুকোচুরি, মুখে মধু প্রাণে ছুরি

কৃপণের ধন বর্বরে খায়, কৃপণ করে হায় হায়

কুপুত্র যদ্যপি হয়, কুমাতা কক্ষনো নয় ।

কূপমণ্ডূক

কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা

কুবেরের ধন

কুব্জার মন্ত্রণা

কবর থেকে ওঠা

কমোডে বসে কলকাতা বুঝে নেওয়া

কম্বলের লোম বাছতে গাঁ উজাড়

কম্বলের লোম বাছলে থাকে কি?

কুম্ভকর্ণের নিদ্রা

কুম্ভকর্ণের নিদ্রাভঙ্গ

কর গোবিন্দ বাপের শ্রাদ্ধ, আরও বামুন আছে

কর যদি তাড়াতাড়ি, ভুলের হবে বাড়াবাড়ি

করে না মাই মলে সারা রাত কুয়ারা করে।

করছে কিসের জাঁক, ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক ।

কর্জ করে যেই কষ্ট পায় সেই

কর্তা যে ঘি খান তা এক আঁচড়েই মালুম ।

কর্তার ইচ্ছায় কর্ম, উলু বনে কীর্তন

কর্তার পাদের গন্ধ নাই।

করলে যত্ন মেলে রত্ন

কূল কিনারা

কলকাঠি নাড়ানো

কলকে পাওয়া

কলা খাওয়া

কলা দেখানো

কলা পোড়া খাওয়া

কলা বউ

কলা রুয়ে না কেট পাত/ তাতেই কাপড়, তাতে ভাত।

কলাপাতা, কাঠের আঁটি এই নিয়ে বৈদ্যবাটি

কলাপোড়া খাও

কলার ভেলায় সাগর পার

কলায় দলা, হলুদে ছাই, বউরে সেবিলে, পুতেরে পাই ।

কলি কাল

কলিকাল, ছাগলে চাটে বাঘের গাল।

কলির বউ ঘরভাঙানি

কুলীনের লক্ষণ (সদাচার, বিনয়, বিদ্যা, খ্যাতি, তীর্থদর্শন, শাস্ত্রানুমোদিত ধর্মে আসক্তি, বেদাধ্যয়ণ, তপস্যা এবং দান )

কুলে কালি দেওয়া

কুলের কালিও ভাল।

কলের পুতুল

কুলের বার হওয়া

কলের মানুষ

কলজের জোর

কলমে কায়স্থ চিনি গোঁপেতে রাজপুত । চিকিৎসক চিনতে পারি যার ওষুধ মজবুত

কলমের খোঁচা

কলুর ছেলে, গয়লার গাই, গৃহস্থকে পুষতে নাই

পোষ্যপুত্র, ঘর জামাই, কটা শুদ্র আর বেঁটে মুসলমান- এই চার শালাই সমান ।

কলুর বলদ

কল্লার (বা দুষ্টের) ঘাড় বোল্লায় ( বা বোলতায় ) ভাঙ্গে ।

কলসির জল গড়াতে গড়াতেই শেষ

কুশীলব

কুশো, কেশে, বেনা; অভাবে সন্না । টাকা-পয়সা কড়ি, অভাবে গড়াগড়ি ।

ক্ষেত আর পুত।/ যত্ন বিনে যমদূত।।

ক্ষেতের চাষে দুঃখ নাশে

ক্ষেপই হারে, জনম হারে না

কষ্ট দিয়ে দান, আর পিত্তি মেরে ভোজন

কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না

কষ্ট বই ইষ্ট নাই

কৃষ্ণকথা মধুরবানী, তুমি বল আমি শুনি

কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে

ক্ষুদ খেয়ে পুঁজি করে, দুপুরুষে খরচ করে

ক্ষুধা পেলে দুহাতে খেতে চায়

ক্ষুধার ধার ছুঁতে কাটে

ক্ষমার বড় গুণ নাই, দানের বড় পূণ্য নাই

কুসংবাদ বাতাসের আগে ধায়

কুসঙ্গে থাকার চেয়ে একা থাকা ভাল

কুঁড় খেয়ে ভুঁড়ো

কুড়কুড়ি মরবে, নাঙে বাড়ি ছ্যাড়বে।

কুড়াল দিয়ে কখনো বন্ধুর কপালে বসা মাছি মারতে যেয়ো না ।

কড়ি দিয়ে কানা গরু কেনা

কড়ি দিয়ে কিনব দই, গোয়ালিনী মোর কিসের সই ?

কড়ি দিয়ে খাই দই, কই করবে মোর গয়লা সই ।

কড়ি দিয়ে হেটে নদী পার

কড়ি নেবে গুণে, পথ চলবে জেনে

কড়ি ফটকা চিঁড়ে দই, কড়ি বিনে বন্ধু কই ।

কড়ি হলে (দিলে) বাঘের দুধ মেলে

কুড়িতে বুড়ি, মরলে মুড়ি

কড়ির জিনিস পড়িস না

কড়ির মাথায় বুড়োর বিয়ে

কুড়ে কৃষাণ অমাবস্যা খোঁজে

কুঁড়ে গরুর এঁটুলি সার

কুঁড়ে ঘরে বাস, খাট পালঙ্কের আশ

কুড়ে পাটুনীর মুখে আঁটুনি

কুঁড়ের অন্ন হয় না

কুড়ের পাতে বসে খেও, বেয়োর কাছে না যেও

কুড়ের বাক্যে মরি পুড়ে

কুড়ের বাথান বৈদ্যনাথে

কুঁড়ের বাদশা

কুড়েরে কুড়ে, বায় বয়, না, দোরটা দিলে ভাল হয় ।

কুড়েরে বলে কুড়ে-- আমি ঘুমাই, তুই দোর তাড়া দে ।

কুয়ো (কুয়াশা) হয়, আমে ভয়, তাল তেঁতুলের কিছুই নয়

কুয়োর ব্যাঙ

কয়নি আলা বড় লয়, সয়নি আলা বড়।

কয়লা ছাড়ে না ময়লা

কয়লা ধুলে ময়লা যায় না ।

খাই দাই কাঁসি বাজাই, রগড়ের ধার ধারি না

খাই দাই ডুগডুগি বাজাই

খাই দাই বাঁশি বাজাই

খাই দাই ভুলিনি, তত্ত্ব কথা ছাড়িনি

খাওয়া মুখেতে মুগের ডাল, খাব আর পাড়ব গাল

খাওয়াবে হাতির ভোগে, দেখবে বাঘের চোখে

খাঁচায় পুরে খোঁচা মারা

খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে, কাল হল এঁড়ে বলদ কিনে ।

খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি

খাট ভাঙ্গলে ভূমিশয্যা

খাটে খাটায় সোনার ক্ষিতি ( বা লাভের গাঁতি), তার অর্ধেক মাথায় ছাতি, ঘরে বসে পুছে বাত, তার কপালে হা ভাত

খাডাইশ্যা কুত্তার আগুইন্যা পাদ

খাতায় কলমে

খাতায় নাম লেখানো

খাঁদা নাকে তিলক পরা

খাঁদা নাকে নথ, আর গোদা পায়ে মল

খাব না খাব না অনিচ্ছে, তিন রেক চেলে একটা উচ্ছে।

খাবার বেগুন, আর বেচবার বেগুন

খাবার বেলায় নেবার মা, উলু দেবার বেলায় মুখে ঘা

খাবার বেলায় মস্ত হা, উলু দেবার বেলায় মুখে ঘা

খাবার সময় শোবার চিন্তা

খারাপ ছুতোর বেশি আবর্জনা তৈরি করে

খাল কেটে কুমীর আনা

খাল পার হয়ে কুমীরকে কলা দেখানো

খালি কলসি বাজে বেশি

খালি পেটে ধর্ম হয় না

খালি পেটে পানি খায়/ যার যার বুঝে খায়।

খালি মাথার চেয়ে খালি টাকার থলে অনেক ভাল

খালি হাতে ফেরা

খায় দায় লাল মিয়া, মোটা হয় জব্বার।

খায় না খায় সকালে নায়, হয় না হয় তিনবার যায়, তার কড়ি কি বৈদ্যে পায় ?

খায় না দেয় না পাপী সঞ্চয় করে, তার ধন খায় চোরে আর পরে

খায় মালসাট মেরে, উঠে ধরে হাঁটু।

খায় লয় চাঁদ রায়ের, নাম লয় কেদার রায়ের

খিচুড়ি পাকানো

খিদে থাকলে নুন দিয়ে ভাত খাওয়া যায়

খিদের চোটে পাটকেলে কামড়

খিদের মাথায়

খিড়কি দিয়ে হাতি গলে সদরে বাঁধে সূচ

খুচিয়ে ঘা করা

খুচরো কাজের মুজরো নাই

খেঁকি কুকুরের ঘেউ ঘেউ সার

খেজুর গাছ তেলপানা হয়েছে

খেজুরে আলাপ

খেটে খাওয়া যাদের বরাত, কাটবে না তাদের দুঃখের রাত

খেটে মরে হাঁস, ডিম খায় দারোগা বাবু ।

খেতে খেতে লোভ বাড়ে, কেঁদে কেঁদে শোক

খেতে পায় না পচা পুঁটি হাতে পারে হীরের আংটি

খেতে পেলে শুতে চায়

খেদাই না, তোর উঠন চষি ।

খেলা ভাঙার খেলা

খেলতে জানলে কানাকড়ি দিয়েও খেলা যায়

খেয়ার কড়ি দিয়ে ডুব দিয়ে পার হওয়া

খেয়ে দেয়ে একাদশী

খেয়ে দেয়ে যায় শুতে, বিধাতা নিয়ে যায় মুলো চুরি করতে

খৈয়ে বন্ধনে পড়া

খোঁটার জোরে মেড়া লড়ে ।

খোঁটার বলে গাড়ল যুঝে

খোদা যা গড়বেন তা মনে মনেই জানেন

খোদাকে কে দেখেছে; আক্কেলে মালুম হয়।

খোদার উপর খোদকারি

খোদার খাশি

খোদার নাও দোয়ায় চলে

খোলনলচে পাল্টানো

খোশ খবরের ঝুটাও ভাল ।

খোষে তৈল নাই, কলাবড়ার সাধ

খোঁড়ার পা খানায় পড়ে

খঞ্জনের নৃত্য দেখে চড়াইও নৃত্য করে

খুঁট-আঁখুরে গাঁয়ের বালাই

খুঁটি না থাকলে ঘর আপনি পড়ে

খটমটিয়ে হাঁটে নারী, কটমটিয়ে চায়, মাস-খানেক ভিতর তার সিঁথির সিঁদুর যায়

খুদের জাউ পায় না, ক্ষীরের জন্য কাঁদে

খুন করলে খুনে, পরের কথা শুনে

খনা বলে চাষার পো/ শরতের শেষে সরিষা রো।

খনা বলে শোনভাই/ তুলায় তুলা অধিক পাই।

খনা বলে শুন কৃষকগণ/ হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন/শুভ দেখে করবে যাত্রা/ না শুনে কানে অশুভ বার্তা।/ ক্ষেতে গিয়ে কর দিক নিরূপণ,/ পূর্ব দিক হতে হাল চালন/ নাহিক সংশয় হবে ফলন।

খনা বলে শুনে যাও / নারিকেল মুলে চিটা দাও/ গাছ হয় তাজা মোটা/ তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।

খর নদীতে চর পড়ে না

খরা ভুয়ে ঢালবি জল/ সারাবছর পাবি ফল।

খরচের খাতায় নাম লেখানো

খুরে খুরে দণ্ডবৎ, খুরে নমস্কার

খল যায় রসাতল

খড় কুটোর মত ভাসা

খড়্গ বাগিয়ে বসা

খুঁড়িয়ে বড় হওয়া

খড়ের আগুণ

খড়ের আগুন যেমন জ্বলে তেমন নেভে

খড়ের কার্ত্তিক

খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা ।

খড়ম পায়ে দিয়ে গঙ্গা পার

খয়ের খাঁ

গু-এর এপিঠ ওপিঠ দুপিঠ সমান

গু-এর দু পিঠেই গন্ধ

গঙ্গা গঙ্গা, না জানি কত রঙ্গা চঙ্গা ।

গঙ্গা মড়া আলেন না

গঙ্গাজলে গঙ্গা পূজা

গঙ্গার আবার গঙ্গা লাভ

গঙ্গার জল গঙ্গায় র'ল, পিতৃপুরুষ উদ্ধার হল

গঙ্গার জলে স্নান, তুঙ্গার জল পান

গঙ্গার দুকূল ভাঙ্গে না

গঙ্গায় অনেক জল বয়ে যাওয়া

গঙ্গায় ডুব দেওয়া

গঙ্গায় ময়লা ফেললে গঙ্গার মাহাত্ম্য কমে না

গঙ্গায়ও মলুম, ভুতও হলুম

গাঁ গড়ানে ঘন পা। যেমন মা তেমন ছা।। থেকে বলদ না বয় হাল, তার দুঃখ সর্ব্বকাল।

গা ঘামানো

গা ছুয়ে বলা

গা ঝাড়া দিয়ে ওঠা

গা ঢাকা দেওয়া

গা ঢেলে দেওয়া

গা বাঁচানো

গাঁ বড় তার মাঝের পাড়া, নাক নেই তার নাক নাড়া

গা ভারী হওয়া

গাং ডিঙ্গুলে কুমিরকে কলা দেখানো |

গাই কিনবে দুয়ে, বলদ কিনবে বেয়ে

গাই গোয়ালা ভাব থাকলে আধসের দুধ এক হাটু জলে

গাই ছিল না হল গাই, চালুনি নিয়ে দুইতে যাই।

গাই নেই তো বলদ দো

গাই পালে মেয়ে/ দুধ পড়ে বেয়ে।

গাই বাছুর ঠিক থাকলে দুধের অভাব নাই।

গাই বাছুরে ভাব থাকলে মাঠে গিয়ে দুধ দেয় ।

গাইতে গাইতে গায়েন আর বাজাতে বাজাতে বায়েন

গাইয়ে বাছুর লনা গোয়াইল্যার পেরেশানি

গাও নষ্ট কানায়, পুকুর নষ্ট পানায়।

গাঙ দেখলে মুত আসে/ নাঙ দেখলে হাস আসে (নাঙ মানে - স্বামী)

গাঙে গাঙে দেখা হয় তো বোনে বোনে দেখা হয় না

গাছ থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ- সাত, যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত।

গাছ থেকে ফল ভারী নয়

গাছ প্যাকলে সার আর মানুষ প্যাকলে অসার।

গাছ-গাছালি ঘন রোবে না/ গাছ হবে তাতে ফল হবে না।

গাছে উঠতে পারে না, বড় ছানাটি আমার ।

গাছে ওঠে পড়তে, আর জামিন হয় মরতে

গাছে ওঠে পড়তে, জামিন দেয় মরতে

গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল

গাছে গাছে আগুন জ্বলে/ বৃষ্টি হবে খনায় বলে।

গাছে গরু চরানো, মুখে ধান শুকানো

গাছে চড়ানো; গাছে ওঠানো

গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নেওয়া

গাছে তুলতে সবাই আছে, নামাতে কেউ নেই

গাছে না উঠতেই এক কাঁদি

গাছে বেল পাকলে কাকের কি

গাছের পাড়া, তলারও কুড়ানো

গাছের পরিচয় ফলে

গাছের শত্রু লতা, মানুষের শত্রু কথা

গাছেরও খাবে, তলারও কুড়াবে।

গাঁজা খাওয়া

গাঁজা গুলি অন্নভাঙা তিন নিয়ে ফরাসডাঙা

গাঁজা তাড়ি প্রবঞ্চনা -- তিন নিয়ে সরশুনা

গাঁজাখুরি গল্প

গাজনের নেই ঠিক ঠিকানা, ডেকে বলে বাজনা বাজা

গাজর, গন্ধি, সুরী/ তিন বোধে দূরী।

গাধা জল ঘোলা করে খায়

গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা

গাধা সকল বইতে পারে, ভাতের কাটি বইতে নারে

গাধার খাটুনি খাটা

গান, বাজনা সুজন এই তিন নিয়ে সিঙ্গারকোণ

গান্ডে পিন্ডে খাওয়া

গান্ধিগিরি

গাল বাড়ায়ে চড় খাওয়া

গাল মন্দ করা

গালভরা কথা

গাড়িকাপড় লা, লা কাপড়গাড়ি

গায়ে আঁচ লাগা

গায়ে ওড়ে খড়ি, কলপ দেওয়া দাড়ি

গায়ে কফিন বেঁধে ঘুরে বেড়ানো

গায়ে গু মাখলে যমে ছাড়ে না

গায়ে থুথু দেওয়া

গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো

গায়ে মাখা

গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল

গায়ে হাওয়া লাগানো

গায়ে হাত তোলা

গায়ের কালি ধুলে যায়, মনের কালি ম'লে যায়

গাঁয়ের গুণে গ'ড়ে গরু বিকায়

গায়ের গন্ধে ভূত পালায়, মাথায় ফুলের তেল

গায়ের জ্বালা



গিন্নি ভাঙল নাদা, ও কিছু নয় দাদা /মেয়ে ভাঙল কাঁসি, পড়ল একটা হাসি / বউ ভাঙল সরা, গেল পাড়া পাড়া

গিন্নির উপর গিন্নিপনা, ভাঙা পিঁড়েয় আলপনা

গিন্নির পাপে গেরস্থ নষ্ট

গিন্নীর হাতে রাঙ্গাপলা, বৌয়ের হাতে সোনার বালা

গেরস্ত কাওরা শোরে কড়ি

গেল গেল রব ওঠে
pages
1 2 3

মান্দি লোকসংস্কৃতি


মান্দি লোকসংস্কৃতি
লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতির ভেতর একটি  জাতির আত্মার স্পন্দন শোনা যায়। লোকসাহিত্য মৌখিক ধারার সাহিত্য । লোকসাহিত্য কোন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য, আবেগ, চিন্তা ও মূল্যবোধকে ধারণ করে। লোকসাহিত্যকে প্রধানত লোকসঙ্গীত,  গীতিকা,  লোককাহিনী, লোকনাট্য, ছড়া,  মন্ত্র,  ধাঁধা ও   প্রবাদ  এই আটটি শাখায় ভাগ করা যায়। লোকসংস্কৃতি ঐতিহ্যগতভাবে বিশেষ সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর মধ্যে যুগ যুগ ধরে, মুখে মুখে স্মৃতি ও শ্রুতির ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। গ্রামে যারা থাকে ...যাদের আমরা বলি শিকড়, তারাই এর ধারক-বাহক। সেসব মানুষের মুখে মুখে ফেরা গান, ছড়া, গল্প, কৌতুক এক সময় কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি উদ্যোগে সংকলন রচিত হলেও তাতে সমষ্টির চিন্তা-ধারা-আবেগ ভালোবাসা জরিয়ে থাকে। এবং সমষ্টির চর্চায় তা পুষ্টি ও পরিপক্কতা লাভ করে।
লোককাহিনী  পুরুষানুক্রমে মুখে মুখে প্রচলিত বর্ণনামূলক গল্প। এর মূল ভিত্তি কল্পনা। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল পর্যন্ত গল্পের আখ্যানের সীমানা বিস্তৃত। মান্দি লোককাহিনী-আনাল গোনাল, দিগ্বিবান্দি, ......। দেব-দৈত্য, জ্বীন-পরী, রাক্ষস-খোক্ষস,  পশু-পাখি, নদী-সাগর, পাহাড়-পর্বত, চন্দ্র-সূর্য, দিন-রাত্রি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গল্প রচিত হয়।

পোকামাকড়

পোকামাকড়

গুগড়া পোকা
জংলী শামুক
ফড়িং




ঘুণ পোকা
জোনাকি
জোনাকি
ঝিঁঝিঁ পোকা
পামরি পোকা
রেশম পোকা
কাচ পোকা
উই পোকা
গান্ধী পোকা
গোবরে পোকা
ঘোড়া পোকা

বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আদিবাসী সম্প্রদায় ও তাঁদের পরিচিতি


স্মরণাতীতকাল থেকে বংশ পরম্পরায় বৃহত্তর ময়মনসিংহে(ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নেত্রকোন্‌, সিলেট, শেরপুর ও সুনামগঞ্জ) আদিবাসী সম্প্রদায় বসবাস করে আসছে। এবং এদের প্রত্যেকের আলাদা ভাষা, সংস্কৃতি রয়েছে। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, খাদ্যাভ্যাস ...আলাদা আলাদা। ছোটো ছোটো আলাদা আলাদা জাতি-গোষ্ঠী।এসব জনজাতির মানুষের সাথে প্রকৃতি এবং জঙ্গলের একটি নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অতীতে তারা জুম চাষ করতেন। লাঙ্গলের সাহায্যে কৃষি কাজ তথা আধুনিক চাষাবাদ তাদের অজানা ছিলো। ধর্মান্তর, বিশ্বায়নের ঝড়ে ঝরে গেছে বহু ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক জনজাতির পরিচয়-ভাষা-সংস্কৃতি। আবার বিশ্বায়নের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি, শিল্পকলা, সাহিত্য-চর্চা অপর ভাষাভাষী মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারছে তারা । 

০১. মান্দি
০২. হাজং
০৩. মান্দাই
০৪. কোচ
০৫. বানাই
০৬. ডালু
০৭. ক্ষত্রিয়
০৮. হদি

বচন নকরেকের নির্বাচিত কবিতা


ফুড়ুৎ
দ্যাখতো, আমি আমাকে গুছাচ্ছি একটু একটু করে
পাতার বাঁশির মতো, ভাঁজ করে- হচ্ছে কি?
দ্যাখোনা, ভাঁজটা যে ভালো হতেই হবে, কি হচ্ছে?
এইবার ফুঁ দাও- জোরে আরো জোরে—-
এইবার চেয়ে দ্যাখো তোমার তীব্র ফুঁতে
আমি এসে পড়েছি তোমার খাঁচা থেকে দূরে –অনেক দূরে
পরকীয়া মেঘ
উপত্যকা ঘেঁষে মেঘ ছুটছে। এখানে
থ্রিজি নেই
ওয়াটারওয়েভে ওয়াই-ফাই
অচল। তুমুল বৃষ্টিতে কে কাঁদে?

বৃষ্টিতে ভেজা বাড়ি। রহস্য খুলে দিচ্ছে
ন্যানো টেকনোলোজি। পাসওয়ার্ড হ্যাকিং
অ্যাপস দিয়ে
গোপনে জেনে নিচ্ছি রোজ
তোমার মনের রহস্য, যতই দেখা
ডানার গতি, ও তুই পরকীয়া মেঘ-
২২/৫/১৪
পুরোনো খেলনা
(প্রিয় আত্মজাকে)
তুমি চলে গেছো ঠিক সময় বা বয়সের সিঁড়ি বেয়েবেয়ে
খেলনাটা ফেলে রেখে গেছো যা বারান্দায় হাঁটে সবাই চুপচাপ ঘুমিয়ে গেলে
আমি শুনি তার পায়ের শব্দ
আমি ফিরে যাই তোমার ছোট বেলায়
তেড়ে এসে ঝাপিয়ে কোলে চড়ে বসা আবদার এটাসেটা মাকে ডেকে কেঁদে ওঠা কতকিছু!
আমি আর তোমার খেলার পুতুল বারান্দায় হাঁটি দুজন;
আর খুব করে মনে পড়ে তোমার প্রশ্ন -‘বাবা, মা কবে আসবে ?’ —
বার বার ফিরে আসি
তোমাকে আজকাল অস্থির লাগে
অস্থির তোমার কথারা
সেলাই করে রাখা কথারা খুলে পড়ে যাচ্ছে
মাচা থেকে,
আজকাল কবিতাও লিখো না কেন?
বৃষ্টির তালে তালে কবিতা পড়তে
তুমি সুনীলের “কেউ কথা রাখেনি ” পড়তে
আবেগ এনে! ছল, ছল হয়ে উঠতো চোখ,
বারান্দা থেকে রোদালো ফুরিয়ে
না যাওয়া পর্যন্ত হাঁটতে থাক একা একা
সেইসব সোনাখর উঠোন,
লাল ঝুঁটিওয়ালা মোরগ দল, নীল-সাদা খয়েরি হাঁস
সময়ের চাকায় চড়ে যে যার মতো
হারিয়ে গেছে পথভোলা পথ ধরে
পুরোনো আলমারি, পুরোনো ঘরে
তোমার বহুজন্মের আগের
ফটো এলবামের ফটোগুলো
খরগোশ, সজারু, ইঁদুরের মতো লাগে
রং ঝলসে গেলে চিত্রাংকনের ছবি
করুন বদলে যায়।
কখনো মনে হয় রগের মতো ছোট নদী
বয়ে যাচ্ছে মেলা রক্ত স্রোত নিয়ে,
জীবন একটা ছোট চলচ্চিত্রই যেন
কত কিছুই ঘটে যায় একটা ছোট জীবনে
নাটকের মতো চরিত্ররা আসে….. যায়
আড্ডা জমানো মানুষগুলো, মুথায় আগুন
জ্বালিয়ে রেখেই হালত ধরে চলে গেছে না ফেরার ঠিকানায়-
জরো হওয়া মানুষেরা বসে থাকে গল্প
শুরু হবে ভেবে-
কোলে দেখা শিশুরাও বড় হয়ে গেছে
বিয়ে হয়েছে, ভালো চাকরি হয়েছে
না খেয়ে থাকা গরিব পরিবারটা
নিজেদের ভাগ্য বদলে নিতে
পেরেছে
-অহ! এখন সিগারেট খেয়ে নিবে?
শ্বাসকষ্ট বেড়েছে?
এই ফাঁকে তোমার গত জন্মের প্রেমিকার চিঠিটা পড়ে শোনাই
-এখন না?
রাত বেড়ে যাচ্ছে
ল্যাপ্টপের দেয়ালে এঁকে দেখো
একটা নারী মুখ,
চোখ আঁকলে জলটলমল করে উঠবে
বেচারি, তোমাকে ভালোবাসতো কি-না
প্রথমা, যাকে বলতে তুমি-
নাম, আমারো মনে নেই।
ঘুম পাচ্ছে বুঝি?
ঘুমালেই স্বপ্নে নীল হয়ে যাবে তুমি
জংধরা খাঁচা থেকে বেরিয়ে
দেব-দূতের মতো সিঙ্গা ফুঁকতে ফুঁকতে
এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে ঘুরে বেড়াবে
                                                       তুমি
আর খুঁজবে, পুরোনো ধ্বংসস্তূপে
হারিয়ে যাওয়া দিন, দু’বেণী বাঁধা
হরিণী কিশোরী…
ভাড়া করা শরীরে আর কতদিন?
তাও একদিন বেহাত হয়ে যাবে
বেহাত হওয়া জুম খেতের মতো
বেহাত হয়ে যাওয়া প্রেমিকার মতো
এভাবেই একদিন
কোত্থেকে খাটবোঝাই পাখির পালক
উড়ে এলো
এমন নরোম বিছানা পেয়ে
ঘুমিয়ে পড়বে
শেষ ঘুম
আবার কার গর্ভে, কার প্রেমিক হয়ে
কোন সমুদ্রে , কোন জলসীমার নাবিক হয়ে, এই অস্থির ধরায়…
বনবিহারিণী হরিণী অরণ্যা
জানলায় বসলেই ‘দিঘি’কে দেখতে পাইচুল ছড়িয়ে দিয়ে রোদ পোহায়, আকাশ দেখেখোঁপা খোলা বাজারে সকাল সকাল জমে ওঠে চায়ের আড্ডাচায়ে টোস্ট ডুবিয়ে গল্পে মশগুল সরল মানুষগুলোমাঝে মাঝে করাতকলের বিকট আওয়াজচোরাই কাঠের রমরমা ব্যবসা, বন বিনাশজমিয়ে আড্ডা মারে ফরেস্ট গার্ড, কাঠ চোর, চ’লে লেনদেননা, আমি আবার আমার জানলায় ফিরে যাবোদিঘি আমার পড়শি, ছুটিতে আসলে পায়ে আলতা মেখেরোদ পড়া উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকে চুল ছেড়ে দিয়েগুনগুন ক’রে গায় পুরোনো দিনের বাংলা সিনেমার গানওর ভীষণ গভীর কালো চোখে চোখ পড়লেগুহার ফড়িঙ দল ডানা ঝেড়ে ঝেড়ে ছুটে আসে দলে দলেসে এখন আমার মন ভালো ক’রে দেয়া এক চিলতে আকাশ
বনবিহারিণী হরিণী অরণ্যা…
বেদখল কবিতার খামার
মান্দি পাহাড়। সজারুর আস্তানা কত
                                                  দূরে?
মুথা উপরানো বিরান বনে নেই আর চেনা পাখি
খরখরে পাতাও নেই
বিলুপ্ত প্রায় শিস দেয়া শালিক
বদলে যায় জুমখেতের মালিকানা
একদিন, আমার বাড়ি আর আমার না
বেদখল খাস জমি, কবিতার খামার
শোল-পুঁটির পুকুর…
১৬ সে’২০১৪
কোথাও ফুল নেই
শীতের ভেজা মেঘ ফিরে যাচ্ছে, তবে কী দিন ফুরুলো
উঠোনে পাতা ঝরা গড়াচ্ছে
রাস্তায় সাইকেলরিক্সা
সবজি ব্যাগ হাতে বের হই
বোতাম ছেঁড়া কুয়াশা সকাল
কোথাও ফুল নেই
এত রুক্ষ লাগে কেন সব?
যেমন তুমিও নরোম কোমল কন্ঠেই শুনালে অপ্রিয় নিষ্ঠুর
                                                                            কথা
কষ্ট পাইনি। আমিতো প্রেরণা করে নিই
তোমার দেয়া কষ্টগুলো
ভুলে থাকি আমাদেরও ছিটেফোঁটা
সুখের দিন ছিলো।
চা খানায় দাঁড়ালে চা-র তেষ্টা জাগে
চায়ে ঠোঁট বাড়ালে তোমর মুখ ভেসে ওঠে
আজকাল তোমার মুখ এত ভাসে ক্যান?
ঘাটের কাঁচা বাজারে এসে
অন্যমনা হ’য়ে যাচ্ছি
তবে কী দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে?
কী-সব ভাবছি আমি!
কী-ই বা ভাবার আছে
দোকানির সাথে লেনদেন শেষে বাড়ির দিকে ফেরা
হয়তো কেউ আসবে ডোরবেল বাজবে
তেতলা থেকে নিচে নামা-
৬/১২/১৬
পুরাতন নিয়মের পাপীরা
পুরাতন নিয়মের পাপীরা জেগে উঠেছে
গণ্ডূষের দ্রাক্ষারস পান করতে করতে
ছুরি চালাচ্ছে হরিণের আয়ত চোখে
সবুজ ঘাসে ছাড়ছে এসিডগন্ধ প্রসাব
সিগারেটের আগুনে পুড়ছে শুভ্র পালক
খরগোশের লোম
ছিনতাই করে নিচ্ছে মানুষের ভিতর থেকে
                                                      মনুষত্ব
পাইয়ে দিচ্ছে রক্তের নেশা!
মানুষ মানুষ খেলতে খেলতে হারাচ্ছে
মানবতা
পিশাচেরা ভর করেছে মানুষের ভেতর
গরিব অসহায়েরা হারাচ্ছে অন্ন, ভিটামাটি, কথাবলার ভাষা-
জীবনারণ্যে জীবনের ভেতর মানুষ কী আর মানুষ আছে?
৭/১২/১৬
পলিথিনের চালে বৃষ্টি
কদিন যাবত ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে
কাঠফড়িং, কাঠপিঁপড়ে ভেসে যাচ্ছে
                                                জলে ভেসে।
কাঁটা বেঁধা পা করছে
ভীষণ জ্বালা-পুড়া
ভীষণ সুন্দর পৃথিবীতে কেউ খাচ্ছে
কেউ খিদেয়
ছটফট করছে।
আমার পলিথিনের ঘর
বৃষ্টির তাড়া খেয়ে এসে দেখি
ঘর আমার হারিয়ে গ্যাছে
বানের জলে ভেসে…
খেলনা বউ
বাঁশচটি বুনার শব্দ,নায়র আসা মেয়ে মাকে বলে,‘আমার খেলনা গুলান কৈ, ফেলায়                                                   
                                                দিসো?
বলাকা ব্লেডে কানুর দাঁড়ি-মুচকাটা থেমে যায়-মন চলে যায় পেছন দিনেমেয়েটা কিছুদিন আগেও তার পিঠে                                                   
                                                 চড়ে
পাড়া ঘুরতো…
আয়ু
দাঁড়ি, কমা ছাড়াই হয়ে গেল সকালের নাস্তাসিদ্ধ করা মাশরুম, মাছের আঁশরাতে খোঁজে না পাওয়া সিগারেটটা পাওয়া গেলো পড়ার টেবিলেইকবিতার বইয়ের আড়ালে, অমনি জ্বালিয়ে নিলাম,বেচারা নিজে জ্বলে আমাকেও চার্জ দিচ্ছে-কি সুখময় অনুভূতি !ধেনু মদগন্ধ বিকেল, ছুটে আসে স্মৃতি নিয়েযতই ভুলতে চাই, ততই তারই নাম ?আয়ু শেষে, সিগারেট ছোট হয়ে আসতে থাকে
বয়েসী মানুষের মতো…
১৯/১/১৬
নতুন প্রজন্ম
নিষিদ্ধ ফলের গালে চুম্বন এঁকেপেয়ে যাই জ্ঞানবৃক্ষের সন্ধান।নিষিদ্ধ ফল মানে জ্ঞানবৃক্ষহবা, নগ্ন নারীরসাল আঙুর।পূজোর ফুলে ঢাকা উঁচানো শিব শিশ্নসেই গুরু, সেই ঠাকুর।
শিল্পভেদী পালক
একটা গজল সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়া বইলোবৃষ্টির ঝাপটায় ভিজে গেলো গজল প্রিয় মন।.
শুন্যতায় উড়ে শাদা শাদা পালকস্বপন ভাঙা সন্ধ্যা, তুই নাড়িয়ে গেলিঅস্তিত্বের খুঁটি।
জানই তো অই নাম আমাকে ব্যাকুল ক’রে তোলেতবে ক্যান তাকে দাঁড় করালে অনুভবের ছাঁয়ায়?শিল্পভেদী কষ্ট পালক ঝাঁকে ঝাঁকে উড়েআমিও উড়ি ছেঁড়া কাগুজে মাছের মতোকাগুজে মাছ, তুই রেখে দে তোর শিল্পশেখাবেঁচে থাকো ভাতশালিকের বিদ্যেয় ক্ষুধার শিল্পই বড় ভেবে।
মন
ধুলো নেড়ে নেড়ে খুঁজছি হারিয়ে                                     
                                            যাওয়া মন
পেছনে কলের গাড়ির হরনবিকাল গড়িয়ে গড়িয়েচুপচাপ চলে যাচ্ছে বাড়িকই কোথায় মন ? ফিরে আয়…যেখান থেকে আসা সেখানেই আবার ফিরি
দগ্ধ সিঁড়ি
স্বপ্ন রাখার আলমারির পাশে দগ্ধ সিঁড়ি, ওপরের সিলিঙেপুস্তক-খেকো ইঁদুর। মেধাশূন্য বিকেলেউঁকি দেয় জ্যাকেটের বোতামের মতো                                                         
                                                      চাঁদ
জলে ছড়ায় আলো
কার কথা ভাবছো
কার কথা ভাবছো!জানালা খোলা –দ্যাখছে সবাইকার কথা ভাবছো?কার কথা এতো ভাবো তুমিকাকে নিয়ে এতো স্বপ্ন দ্যাখো!জানালা খোলা—দ্যাখছে সবাইআমাকে নিয়েও একটু ভাবো                                           
                                          না
আমিও তাহলে সুখী গলায় বলতে পারবো
-
হে-হে, আমাকে নিয়েও ভাববার আছে একজন….