বচন নকরেক এর কবিতাগুচ্ছ || জলটুঙি ||

বনের ধারে রোদের ফোঁটা

তীরধনুকে আলতা মেখে
আগুনের পাশে বসে আছি!
.
বনের ধারে রোদের ফোঁটা
রোদপোহানোর দিনে
পাখিরাও রোদপোহায় বন্দুক ছুড়ে মেরে বনে-
.
মাথা থেকে টুপি নামিয়ে গুলির খোসা কুড়াতে কুড়াতে
হলুদ খেতের দিকে যেতে যেতে
ফুরিয়ে যায় আহা! রোদপোহানো বন!
.
২১.১১.১৮


বিষন্ন একা এক হিম সন্ধ্যা
ইচ্ছে করলে পানের ডিব্বা
হাওয়া করে দিতে পারি,
অসমাপ্ত রেখে দিই গল্প লেখা
কবরে বসে লিখব বলে!
.
স্রোতে ভাসিনা বলে চিনতে পারলি না
পোড়ানো কবিতায় সেকে নিচ্ছি বিষন্ন একা এক হিম সন্ধ্যা...
.
২১.১১.১৮


মায়াজাল

ফালতু জীবন থেকে মুক্তি চেয়ে
নির্জন ঘাটে এসে দাঁড়াই
এখানেও পাখির ভিড়, জর্দার গন্ধ
গভীর ঠোঁটের মায়াজাল
.
২১.১১.১৮


পরিত্যক্ত বাড়ি
পরিত্যক্ত বাড়িতে মুখ গোঁজা খেলনা
ছেঁড়া-ফাঁটা চুল ফিতা
বারান্দাজুড়ে হাঁটাহাঁটির শব্দ 
ইঁদুরের বিষ্ঠা
কেউ নেই আর!
তবু, ঘুমিয়ে আছে হাজারো কথা
.
১৮.১১.১৮


বেশিদিন তোমাদের জ্বালাবো না
আর বেশিদিন কবি সেজে বসে থাকবো না
সাদা চাদর পিঠে নিয়ে ঘোড়া আসে চোখ বুজলে
ঘি রঙা উঠেরা বালুর পাহাড় বেয়ে চূড়ার উঠে যায়
আমাকে নিতে আসে ...বুঝতে পারি
সেজেগুজে চ’লে যাবো
আর ফিরবো না
বেশিদিন আমিও আর থাকবো না
বেশিদিন তোমাদের জ্বালাবো না

|| জলটুঙি || বচন নকরেক এর ২ টি কবিতা ||



গাঁটরি

এক গাঁটরি ভালোবাসা নিয়ে মাচান ঘরে
লাউয়ের খোসায় অমৃত জল
গোল নাচ শুরুর আগে গলাধঃকরণ করি স্বর্গীয় সুধা
আজ নয় কোন ছন্দ কবিতা। সুরার সুরে
ভুলে যাব যাবতীয় দুঃখ কথা

০৮.১১.১৮





ডাইরিটা


ঝাড়পোঁছ শেষে ডাইরিটা খুলে পড়ি
ভোলা যায় না দরদ মাখা হস্তাক্ষর
পেরেক পোঁতা হাতের রক্তে
ভেজা সাদা পৃষ্ঠা...

আমাকে কেউ এ-তো ভালোবাসতো !

রক্তে লেখা ‘বচন’ নামটা
ডাইরির মাঝ পৃষ্ঠায় ঝুলছে
আর দু’একটা শুকনো গোলাপের পাপড়ি
লেপ্টে আছে ভালোলাগা কথা হ’য়ে...

০৬.১১.১৮