বচন নকরেক |
(১)
নদীর কাছে গিয়ে দাঁড়াই
নদী বলে-তুমি কে?
পাহাড়ের কাছে গিয়ে দাঁড়াই
পাহাড় বলে-তুমি কে?
সমুদ্র সৈকতে গেলাম একবার
সাগর বলে-তুমি কে?
আকাশে তাকিয়ে মেঘ দ্যাখছি
মেঘ বলে- এতো পাগল তুমি ! আমাকে কাউন্ট করো!
ভিখেরির মতো মুখ করে তাকালে সবাই একটা না একটা কিছু ব’লে
মনে মনে
২৯/৫/১৯
(২)
গুণ ও ভাগ অংকে রেখে এসেছি নিমকাঠের বোতাম
জংধরা পেরেক, কাঁটার মুকুট
কফিনে উড়ে সাদা ধুতি , রুপোর ছাতা
কাঁঠালকাঠের দরোজায় আটকে পড়া আঙ্গুল
সোনার প্রলেপে কী উজ্জ্বল হাসি
দেবী, কথা কও , কথা কও দেবী ?
পুরানো রাস্তা ধরেই হেঁটে যাচ্ছি বাড়ি
যে বাড়ির অস্তিত্ব আর খুঁজে পাইনি
(৩)
খুব মায়া মেখে বসে আছে ঘাস
নগ্ন পায়ে কাছে যাই
বুলবুলির ঘুম ভাঙলো!
খুব কাছে মনে হয় দূরের আকাশ-
হলুদ পাতা বাতাসে দোলে
অমাবস্যা রাতে ভয় জাগে
একলা বারান্দায় একলা লাগে
মৃত্যুপুরীর ধরায় ক্যান এলে?
মৃত্যু দাঁড়িয়ে থাকে প্রান্তরের খেতে কাকতাড়ুয়া হয়ে
না দ্যাখার ভান করে কেটে পড়ি
অথবা গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকি আমিও
আমার মতই কী মৃত্যু নিয়ে খেলছো তুমিও ?
২৮/৫/১৯
(৪).
শরীর গলে আত্মা বেরিয়ে গেলে
কোথায় যায়? গাছের ঘাড়ে চড়ে বসে থাকে?
হয়তো গুহার সাপের পিঠে সওয়ার হয়ে ঘোরে
বনবাদাড়
আসলে কোথায় যায়?
না কি পাড়া ঘুরে__দাদার বাড়ি, মামার বাড়ি
দিদির বাড়ি, কাকার বাড়ি, পিসির বাড়ি ,মেয়ের বাড়ি, ছেলের বাড়ি
না কি পায়চারী করে নিজের উঠোনে, বারান্দায়
না কি বাড়ির আনাচে কানাচে ঘেঁটে খোঁজে দেখে মেয়ের শৈশব
ধুলো মাখা পুরোনো জামা , ভাঙা সিগারেট ক্যাশ
কত কিছুই ঘটতে পারে
আগে তো মরে-ই দ্যাখি
(৫)
কেটে ফেলে রাখা গাছের গুড়ির মতো আমাকেও মনে হবে গেলে মরে
মানুষ খুব সামান্য; তা-ই ভুলে যাই পার্থিব অহংকারে
আরো ভালোবাসবো ব'লে বেঁচে আছি
আরো ঘৃণা, অপমান__পাবো আরো প্রত্যাখান
আরো ভালোবাসা আরো কষ্ট যদি দাও
মূলতঃ এটুকুই সম্বল
সোনাদানা-হীরে-মুক্তো কিছুই তো নিয়ে যায় না মানুষ
ভালোবাসা-কষ্ট-বেদনা...নরক-রোদ্দুরে বসে সামান্য স্মৃতি স্মরণ জাবরকাটা
এর বেশি সামর্থ্য নেই নিয়ে যাবার মানুষের_
২৭/৫/১৯