মারিয়া চিরান, পশ্চাৎপদ মান্দি এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে এক নিবেদিত প্রাণ

হা'বিমানি রা'সং

মারিয়া চিরান , শিক্ষক, সমাজসেবক

পশ্চাৎপদ এলাকায় শিক্ষা বিকিরণে এক নিবেদিত প্রাণ

মারিয়া চিরান ছিলেন নিজে আলোকিত, শিক্ষার লন্ঠন, উজ্জ্বল প্রদীপ শিখা । তাঁর হাতে গড়া কৃতী শিক্ষার্থীরা দীপ্তিমান সূর্য রশ্মির বিকিরণ ছড়িয়ে জ্বলছে হা’বিমাসহ গোটা মান্দি এলাকায়। 

আরো পড়ুন  
জাতীয়ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তাঁরা । হা’বিমায় শিক্ষা বিকিরণে নিবেদিত প্রাণ মারিয়া চিরানের জন্ম ১৯৪৭ খ্রিঃ ২৫ ডিসেম্বর শেরপুর জেলার মরিয়মনগর গ্রামে। পিতা রামসিং নকরেক, মাতা রগমণি চিরান। মাতা ছিলেন সুগৃহিনী ও ধাত্রী। তাঁর শৈশব কেটেছে শেরপুরে। নিজ গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন । ময়মনসিংহ মিশনারি হোস্টেলে থেকে কলেজে পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষকতায় স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করে আদর্শ শিক্ষার বীজ বপন করতে তিনি জলছত্র কর্পোস খ্রিস্টি হাইস্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং তাঁর গৌরবময় কর্মজীবনের সূচনা করেন। দীর্ঘদিন সহাকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করার পর তিনি ১৯৮০ খ্রিঃ ৭ জুলাই প্রধান শিক্ষক হিসেবে পূর্ণ নিয়োগ পান।


অত্যন্ত নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে তিনি পালন করে গেছেন প্রধান শিক্ষকের গুরুদায়িত্ব। তাঁর শিক্ষকতার গৌরবময় দীর্ঘ ২৯ বছরে গড়ে তুলেছেন অসংখ্য কৃতি শিক্ষার্থী। কেউ হয়েছেন ডাক্তার, অ্যাডভোকেট, ম্যাজিস্ট্রেট, ফাদার, সিস্টার, অধ্যাপক। কেউ কেউ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নন গভর্নমেন্ট সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কৃতিত্বের সাথে কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষার উজ্জ্বল প্রভা পিছিয়ে থাকা শিক্ষা বঞ্চিত সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে তিনি ২০১০ খ্রিঃ জানুয়ারি মাসে শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।



১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে নবীন চাম্বুগং এর সাথে শুভ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে নুয়েল চিরান ও নীতা চিরান নামে দুই সন্তান রয়েছে।



এখনো সামাজিকদায়িত্ববোধ থেকেই সমাজসেবা ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। জলছত্র মহিলা উন্নয়ন সমিতির তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর মধুপুর সনাক –এর সম্মানিত সদস্য। তিনি লেখালেখিও করেন। তাঁর লেখা নিবন্ধ বিভিন্ন ম্যাগাজিনে প্রকাশ হয়েছে।



বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্যে তিনি ১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯৬ খ্রিঃ ফিলিপাইন ভ্রমণ করেন।



* শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য পোপের প্রতিনিধি ভাটিকানস্থ বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি কর্তৃক (ক্রশ অব অনার)সম্মাননা পান তিনি।
* হা’বিমা মান্দি এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদানের জন্যে আজিয়া সংগঠন তাঁকে সংবর্ধনা স্মারক প্রদান করে। ময়মনসিংহ ধর্ম্প্রদেশ থেকে শিক্ষায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বিশেষ সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন।