ফাদার তিমথি রেমা , খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা নেওয়ার কারণে যাকে ঘর ছাড়তে হয়েছিল!

হা'বিমানি রা'সং রেভাঃ তিমথি রেমা

হা'বিমানি রা'সং
রেভাঃ তিমথি রেমা, শিক্ষক, পুরোহীত সমাজসেবক
বাবা ঘোর সাংসারেক খামাল। ছেলে খ্রিস্টান হয়ে গেছে। এই রাগে ছেলেকে তাড়িয়ে দিল বাড়ি থেকে চিরদিনের জন্য। কি আর করা । চাচ্ছি-আমা আবির বাড়িতে বড় হলেন ।


তিনি আর কেউ নন চার্চ অব বাংলাদেশের প্রয়াত পুরোহীত রেভাঃ তিমথি রেমা। শিক্ষকতার পাশাপাশি খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার ও মণ্ডলী গঠনে বিরাট ভূমিকা রেখে গেছেন তিনি।

তিনি থানারবাইদ গ্রামের সন্তান। তাঁর বাবা মদন মারাক সনাতন ধর্ম সাংসারেকের খামাল ছিলেন। ছেলে তিমথি রেমা খ্রিস্টান হয়েছেন শুনে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বাড়ি থেকে বাবা তাড়িয়ে দেয়ায় এগ্নেস রেমা রেজ্জির বাবা তিমথি রেমাকে আশ্রয় দান করেন। তিনি সেখানে থেকেই পড়াশোনা করেন। সেই যে বাড়ি ছেড়ে ছিলেন আর মা-র বাড়ি ফিরেন নি।

শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু হয় তাঁর। তারপর চার্চ অব বাংলাদেশের থিওলজি কলেজের প্রথম ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন। দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে প্রভুর বাক্য প্রচার ও সেবা করেছেন। থানারবাইদ মন্ডলী তথা মধুপুর অঞ্চলের ইদিলপুর,ধরাটি বেরীবাইদ,পিরোজপুর মন্ডলী গুলো একাই সাইকেল চালিয় ম্যানেজ করে গেছেন।থানারবাইদ গ্রামে শিক্ষার আলো ও খ্রিস্টের আলো ছড়িয়ে গেছেন। তাঁর প্রথম কন্যা দীপিকা সিমসাং,দ্বিতীয় কন্যা শিখা সিমসাং,ছেলে শংকর সিমসাং ও ছোট মেয়ে জুলিয়ানা সিমসাং।

থানারবাইদ গ্রামে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।তিনি ভালো ফুটবল খেলতেন । গান বাজনায়ও ভালো ছিলেন।

তিনি ১৯৮৩ সালে পুরোহিত পদে হালুয়াঘাটে অভিষিক্ত হন। সমাজ ও মন্ডলীর জন্য তার অবদান অতুলনীয়।চার্চ অব বাংলাদেশ মন্ডলী ও মান্দি সমাজের জন্য তার অবদান অবিস্মরণীয় ।২০০৭ সালে ১৩ এপ্রিল রাত ১০.৩০ মিনিটে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান । ঈশ্বর উনার আত্মাকে চির শান্তি ও চির বিশ্রাম দান করুন।

তাঁর সহধর্মিণী রেণুকা সিমসাং - মধুপুর অঞ্চলের প্রথম রেভারেন্ড বিশ্বনাথ চাম্বুগং এর ( জিবিসি চার্চের) ছোট মেয়ে। এখনও বেঁচে আছেন। তিনি অত্যন্ত সৎ ও পরিশ্রমী ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় রসুলপুর মাঠে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করে মারার জন্য অনেক মান্দি পুরুষদের নিয়ে গিয়ছিলো। তখন কামানের মুখে তিমথী রেমাই প্রথম ছিলেন। শেষে ফাদার হোমারিকের অলৌকিক প্রার্থনার ফলে মৃত্যুর মুখ থেকে প্রথম রক্ষা পান । এভাবে অনেকবার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছিলেন প্রভুর পক্ষে কাজ করতে গিয়ে।